বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রনে দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকাসহ ৫ জেলায় অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি কেএম কামারুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দুই সপ্তাহের মদ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেম দেন আদালত।
আইনজীবী আমাতুল কবির আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন। আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজির মেরসেদ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আর মাহমুদ বাশার ছিলেন রাষ্ট্র পক্ষে।
গত ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ু দূষণে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী গত ৫ ফেব্রুয়ারি রোববার পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদন দেখে বায়ু দূষণ রোধে আদেশ বাস্তবায়নের জন্য দুই সপ্তাহের সময় দেন আদালত।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আজকে যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটাতে আদালত কলেছেন যথেষ্ট নয়। কয়েকটা গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়নি। তাই দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকাসহ আশেপাশের পাঁচ জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। সিটি করপোরেশনকে বলেছেন পর্যাপ্ত পানি ছিটাতে ঢাকা শহরে মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করা, যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গায় ঢেকে রাখাসহ আদালতের আদেশ বাস্থবায়নের কথা বলা হয়েছে।
এর আগে বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
নয় দফা নির্দেশনায় বলা হয়,
১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গায় কনট্রাকটার তা ঢেকে রাখবেন।
৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর নির্দেশ ছিল, এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না , সব সড়কে পানি ছিটানোর ব্যবস্তা নিতে হবে।
৪. সড়কে মেগা প্রজেক্টের নির্মান কাজ এবং কার্পেটিংসহ যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস এন্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলোকে জব্দ করতে হবে।
.৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ীর ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীন চলছে, এর মধ্যে যেগুলো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেম দেওয়া হয়।
৮. পরবেশ অধিদপতরের অনুুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৯ মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে হবে। এরপর মার্কেট ও দোকান বন্ধ হলে সিটি কর্পোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই নয় দফা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সোমবার হাইবোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।