বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সোমবার ( ১৩ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার জানান, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আজই জারি হতে পারে।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটার । বর্তমানে সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী ছিল না।
তাই মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হয়নি।
গত রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নির্বাচন কেমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন বিচারক। ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন তিনি। দুদকের সাবেক কমিশনার ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য তিনি।
একাধারে তিনি আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক, ও বিচারক ছিলেন। ৭৫এর পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামনিয় আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন তিনি।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের মৃত্যুর পর তাকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করা হয়। এছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্র জীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের বাবা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের যুগ্ন সচিব ছিলেন।