দীর্ঘদিন পর বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বসবেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ মামলায় বিচারপতিদের নামের তালিকায় ছুটিতে থাকা মোহাম্মদ ইমান আলীর নাম রয়েছে। প্রধান বিচারপতিসহ নয় বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানির বেঞ্চে রয়েছেন। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নামের পরই বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নাম রয়েছে।
এদিকে, ছুটি শেষ হওয়ার আগেই মোহাম্মদ ইমান আলীর নাম তালিকায় রাখায় আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের
মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। যদিও গুঞ্জন রয়েছে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ায় তিনি আপিল বিভাগের বিচারিক কাজে অংশ নিচ্ছেন না। আজ যদি মোহাম্মদ ইমান আলী বিচারকের আসনে বসেন তাহলে সব গুঞ্জনের অবসান ঘটবে।
সুপ্রিম কোর্টের একাধিক সূত্র জানায়, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন। ১৯ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি শুরু হবে। ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালন উপলক্ষে আদালতে ছুটি থাকবে। সে হিসাবে আজ তার শেষ কর্মদিবস। শেষ কর্মদিবসে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী যদি বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে বসেন তাহলে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী দেশে এসেছেন। তার নাম বৃহস্পতিবারের আপিল বিভাগের তালিকায় রয়েছে।
এর আগে গত ৮ মে বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে ইংল্যান্ড যান জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। পরে গত ২৮ মার্চ আবার ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। আবেদনে লন্ডনে থাকা বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে সময় কাটানোর কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। আবেদনের পর তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়।
২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে। এর পরদিন ৩১ ডিসেম্বর থেকে ছুটিতে যান জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। তার সেই ছুটি ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ছুটি শেষ হওয়ার আগেই তিনি আবারও নতুন করে ছুটির দরখাস্ত করেন। এরপর তিনি আর বিচারিক কাজে বসেননি।
গত এক দশকে আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগে সুপারসিডের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সালে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হলে আপিল বিভাগের দুই বিচারপতি ছুটিতে যান। তারা হলেন- বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান।
একইভাবে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দেওয়া হলে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়া পদত্যাগ করেন।